অপো’র বার্ষিক ইভেন্ট ‘অপো ইনো ডে ২০২২’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৪ ডিসেস্বর) এক লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি ‘অপো ইনো ডে ২০২২’ অনুষ্ঠিত হয়। ‘এমপাওয়ারিং এ বেটার ফিউচার’ প্রতিশ্রুতি নিয়ে অপো’র চারটি স্মার্ট উদ্যোগের (স্মার্ট এনটারটেইনমেন্ট, স্মার্ট প্রোডাক্টিভিটি, স্মার্ট হেলথ ও স্মার্ট লার্নিং) আওতায় নিয়ে আসা নতুন উদ্ভাবনগুলো এবং কীভাবে আরও নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসার মাধ্যমে সবার জীবনমান উন্নত করার পাশাপাশি একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে অনুষ্ঠানে সে সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হয়।
স্মার্ট জীবনের জন্য ওহেলথ এইচওয়ান, ম্যারিসিলিকন ওয়াই ও এয়ার গ্লাস ২
চারটি স্মার্ট উদ্যোগের অংশ হিসেবে অপো এর স্মার্ট হেলথ টেকনোলজির উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে। ব্যবহারকারীদের সুস্থ জীবনযাত্রা গড়ে তুলতে সাহায্য করার জন্য অপো ২০২১ সালে অপো হেলথ ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে এবং এবছর অপো একটি নতুন স্মার্ট হেলথ কেয়ার সাব-ব্র্যান্ড ওহেলথ নিয়ে এসেছে।
>>ব্যবহারকারীদের জন্য আরও উন্নত ইন্টেলিজেন্ট লাইফস্টাইল নিশ্চিত করতে অপো’র ওহেলথ ব্র্যান্ডের অধীনে প্রথম পণ্য ওহেলথ এইচওয়ান ফ্যামিলি হেলথ মনিটর, নিজস্ব প্রযুক্তির ব্যবহার (সেলফ-ডেভেলপড) করে তৈরি করা দ্বিতীয় চিপ ম্যারিসিলিকন ওয়াই ব্লুটুথ অডিও এসওসি এবং অপো এয়ার গ্লাস ২ উন্মোচিত
>>ভার্চুয়াস ইনোভেশন মূলমন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে অপো আরও উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে
‘অপো ইনো ডে ২০২২’ চলাকালীন অপো এর ওহেলথ ব্র্যান্ডের অধীনে প্রথম পণ্য ওহেলথ এইচওয়ান ফ্যামিলি হেলথ মনিটর উন্মোচন করে। ওহেলথ এইচওয়ান রক্তের অক্সিজেন, ইসিজি, হার্ট ও ফুসফুসের শব্দ সংক্রান্ত তথ্য, হৃদস্পন্দন, শরীরের তাপমাত্রা এবং ঘুমের ট্র্যাকিংসহ পরিবারের সদস্যদের কল্যাণের জন্য ব্যবহারযোগ্য প্রয়োজনীয় ছয় ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য পর্যবেক্ষণ করে। এসব তথ্য একটি ডিভাইসে পাওয়া যাবে। কার্যকরী সেন্সর ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অ্যালগরিদমের সাহায্যে ওহেলথ এইচওয়ান ব্যবহারকারীদের পুরো পরিবারের স্বাস্থ্যের আরও ভালো যত্ন নিতে সাহায্য করবে। প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির তুলনায় ওহেলথ এইচওয়ান একটি সুপার-লাইট ডিভাইস যার ওজন মাত্র ৯৫ গ্রাম এবং ওভাল ডিজাইনের কারণে দেখতে বেশ নান্দনিক। এ কারণে ব্যবহারকারীরা ওহেলথ এইচওয়ান তাদের সঙ্গে যেকোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন এবং তাদের দৈনন্দিন রুটিনের অংশ হিসেবে নিয়মিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন প্যারামিটার চেক করতে পারবেন।
ওহেলথ এইচওয়ান উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ব্যবহারকারী, হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর জন্য বিভিন্ন স্মার্ট, প্রফেশনাল ও কল্যাণকর সমাধান নিয়ে আসবে।
অপো ডেডিকেটেড ইমেজিং এনপিইউ ব্যবহার করে তৈরি করা এর দ্বিতীয় চিপ ম্যারিসিলিকন ওয়াই ব্লুটুথ অডিও এসওসি উন্মোচন করেছে। এই চিপ তৈরি করার সময় সবচেয়ে উন্নত এনসিক্সআরএফ প্রক্রিয়া কাজে লাগানো হয়েছে। যার ফলে, ম্যারিসিলিকন ওয়াই (নিজস্ব ব্লুটুথ প্যাক) বাজারের অন্যান্য ব্লুটুথ এসওসি’র তুলনায় ব্লুটুথ ব্যান্ডউইথ প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে সক্ষম। ইউআরএলসি কোডেক প্রযুক্তি এবং ৫৯০ জিওপিএস পর্যন্ত অন-ডিভাইস কম্পিউটিং পাওয়ারসহ ডেডিকেটেড এনপিইউ এর সাহায্যে ম্যারিসিলিকন ওয়াই ব্লুটুথের মাধ্যমে ২৪-বিট/১৯২কিলোহার্জ আল্ট্রা-ক্লিয়ার অডিও প্রেরণ করতে পারে। এমন অভূতপূর্ব উদ্ভাবনের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা ওয়্যার্ড কানেকশনের (তারযুক্ত সংযোগ) মতো একই রকম অডিও মান এবং ওয়্যারলেস ব্লুটুথ ইয়ারবাড ও হেডফোন দিয়ে দুর্দান্ত ডিজিটাল অডিও কোয়ালিটি উপভোগ করতে পারবেন।
ইভেন্ট চলাকালে অপো এর সর্বাধুনিক অ্যাসিস্টেড রিয়েলিটি গ্লাস- অপো এয়ার গ্লাস ২ প্রদর্শন করে। ওজন মাত্র ৩৮ গ্রাম হওয়ায় অপো এয়ার গ্লাস ২ খুবই হালকা; এতে রয়েছে অপো উদ্ভাবিত বিশ্বের প্রথম রেজিন এসআরজি-ডিফ্র্যাকটিভ ওয়েভগাইড লেন্স। দৃষ্টিশক্তি ঠিক করতে এবং পরবর্তী কাস্টমাইজেশনের ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে এই লেন্সগুলো, যা সাধারণ গ্লাসের তুলনায় একদমই আলাদা নয়। অপো এয়ার গ্লাস ২ এর মাধ্যমে ফোন কল, রিয়েল-টাইম ভাষান্তর, লোকেশন-বেইসড (অবস্থান-ভিত্তিক) নেভিগেশন, শ্রবণজনিত সমস্যায় ভুগছে এমন মানুষের জন্য ভয়েসকে টেক্সটে রূপান্তর করাসহ নানা ধরনের স্মার্ট অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা যাবে। নতুন এই গ্লাস মানুষ ও মেশিনের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের সব ধরনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সক্ষম।
কল্যাণকর উদ্ভাবনের মাধ্যমে উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিতকরণ
অপো’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চিফ প্রোডাক্ট অফিসার পেতে লাউ বলেন, বর্তমানে প্রযুক্তি খাত যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা বিশ্বাস করি, সেখান থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে ক্রমাগত উদ্ভাবন। আমাদের ব্র্যান্ড প্রপোজিশন ‘ইনস্পিরেশন এহেড’ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা পণ্য ও প্রযুক্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে সবার জীবনকে উন্নত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা কল্যাণকর উদ্ভাবনের মাধ্যমে স্মার্ট কানেকটেড অভিজ্ঞতা ও উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বাকি অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।
গত কয়েক বছর ধরে অপো একটি উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ কমিউনিটি তৈরি করতে বৈশ্বিক অংশীদারদের সহযোগিতায় নিজস্ব ইকোসিস্টেম নির্মাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। অপো’র ওপেন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ৩ লাখের বেশি ডেভেলপার ও ৭ লাখের বেশি ক্রিয়েটর তাদের পণ্য ও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। অপো কালারওএস হ্যাকাথনের মাধ্যমে বৈশ্বিকভাবে ডেভেলপার ও প্রোগ্রামারদের মধ্যে যোগাযোগকে আরও শক্তিশালী করছে এবং তাদের সহযোগিতা করছে।
গত মে মাসে প্রযুক্তির উৎকর্ষতা সাধনের মাধ্যমে ডিজিটাল হেলথ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমাধান নিয়ে আসতে টেক এক্সপার্ট ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে একত্রে ‘অপো রিসার্চ ইনস্টিটিউট ইনোভেশন এক্সেলারেটরের’ উন্মোচন করে অপো। এছাড়া, গত আগস্ট মাসে, ৩৯টি রাষ্ট্র ও অঞ্চল থেকে ৫৩৬টি প্রস্তাবের মধ্য থেকে সেরা ১০টি আইডিয়া বেছে নেওয়ার ঘোষণা দেয় অপো। এই ১০টি দলকে বিনিয়োগের সুযোগ, প্রযুক্তিগত সহায়তা, বাণিজ্যিক অংশীদারত্ব ও বৈশ্বিক প্রচার ছাড়াও প্রায় ৪৬ হাজার মার্কিন ডলার সমমূল্যের অনুদান পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হয়। এসব দলের মতো অপো একইভাবে বিশ্বাস করে যে, প্রযুক্তিগত সক্ষমতাই জীবনমানকে উন্নত করতে পারে এবং কল্যাণকর উদ্ভাবনের জন্ম দিতে পারে।
প্রযুক্তির উৎকর্ষতা সাধনের মাধ্যমে অপো ওহেলথ এইচওয়ান, ম্যারিসিলিকন ওয়াই এবং এয়ার গ্লাস ২ এর মতো উদ্ভাবন নিয়ে এসেছে। এসব উদ্ভাবনের সাহায্যে স্মার্ট কানেক্টেড অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আরও উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য উদার মনোভাব (ওপেননেস) ও অন্তর্ভুক্তি (ইনক্লুসিভিটি) দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অপো।