বিজয় দিবস উপলক্ষে ঝালকাঠিতে পতাকা বিক্রির ধুম


প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:২৬ এএম   আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:২৬ এএম বিজয় দিবস উপলক্ষে ঝালকাঠিতে পতাকা বিক্রির ধুম

মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে ঝালকাঠিতে চলছে জাতীয় পতাকা বিক্রির ধুম। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাড়া, মহল্লায়, অলি-গলিতে ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন একশ্রেণির মৌসুমি বিক্রেতা।

ঝালকাঠির বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির ছাদ, বারান্দা, বেলকুনি, গাড়ি, রিকশা, এমনকি সাইকেলের সামনে দুলছে লাল-সবুজের পতাকা। আর ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করছে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা।

কথা হয় মৌসুমি পতাকা বিক্রেতা মো. সোহেলের (৩৭) সঙ্গে। তিনি বলেন, বছরের অন্য সময় বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরায় কাজ করি। এইটা বিজয়ের মাস। এ মাসে সবাই পতাকা কেনে, ব্যবসা ভালো হয়। তাই এসময় পতাকা বিক্রি করি। এছাড়া পতাকা বিক্রির কাজটাও সহজ।

যাত্রী নিয়ে কুমারপট্টি রোডে এলেন রিকশাচালক রফিক আলী। রিকশার সামনে বেলের পাশে বাঁধা ছোট্ট একটি জাতীয় পতাকা। ২০ টাকা দিয়ে কিনেছেন তিনি। রফিক বললেন, ‘হারা দিন কত মাইনসে ভাড়া নিয়ে যে রকম ব্যবহার করে আমাগো লগে, সব ভুইলা যাই যহন এই পতাকার দিকে চাই।’

ঝালকাঠি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে দুটি পতাকা কিনলো তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাইসা আজিম। একটি নিজের জন্য, অন্যটি বড় বোনের জন্য নিলো। রাইসা বলল, ‘পতাকার জন্য যুদ্ধ দেখিনি, কিন্তু গল্প শুনেছি, আর বইতে পড়েছি।’

বছর ঘুরেই আসে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আর বিজয়ের মাস আসলেই মৌসুমি ব্যবসায়ীদের পতাকা বিক্রির ধুম পরে যায়। তারা পায়ে হেঁটে শরীরে এবং মাথায় পতাকা বেঁধে বিভিন্ন সাইজের জাতীয় পতাকা বিক্রি করেন। বিজয়ের চেতনায় এ মাসের শুরু থেকেই বেড়ে যায় জাতীয় পতাকার ব্যবহার। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে জেলা শহরের অলি-গলিতে মৌসুমী পতাকা বিক্রেতারাও হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন দেশের জাতীয় পতাকা। নির্ধারিত মাপে কাপড়ের পতাকার পাশাপাশি কাগজ দিয়ে তৈরি পতাকাও বেশ বিক্রি হচ্ছে। কাগজের পতাকা দিয়ে ফুটপাথ বা দোকানপাট, বাসা সাজানো হচ্ছে।

বড় বাজারে পতাকা বিক্রি করেন সাইফ উদ্দিন। তিনি বলেন, এরই মধ্যে সব আকারের পতাকা বিক্রি করেছি। ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে কিনছেন। তবে ডিসেম্বরের শুরু থেকে দিন যত যেতে থাকে বিক্রিও তত বাড়তে থাকে। শুধু পতাকা নয়, লাল-সবুজের মাথার কাগজের ক্যাপ, রাবার, হাতের ব্যাজ বিক্রি করছি।

তিনি আরও বলেন, আমি কুমিল্লা থেকে পতাকা বিক্রি করতে এসেছি। জাতীয় পতাকা বিক্রি করে আমি গর্বিত। আমি মনে করি, পতাকার মাধ্যমে আমি দেশের মানুষের কাছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি তুলে দিচ্ছি। পতাকা দেখলেই মনে হয় মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিবিজড়িত কথা। এ পতাকার জন্য বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন।

কয়েকজন বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকারভেদে ১০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পতাকা বিক্রি হয়। এছাড়া কাগজের ছোট পতাকাসহ বিভিন্ন সাইজের পতাকা বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়।

মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ইমাম বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য একটি জাতীর প্রতীক পতাকা, পতাকা নির্দিষ্ট রঙ এবং মাপ থাকলেও তা অনেকেই মানছেন না। বিভিন্ন জায়গায় গাঢ় সবুজ মাঝখানে লাল রক্তিম সূর্যের রঙ খুঁজে পাওয়া যায় না, এমনকি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও।

বরিশাল

বাংলাদেশ বিভাগের আরো খবর

Top